5.3 C
New York
Thursday, March 13, 2025

নদীতে বিলীন হচ্ছে সুন্দরবনের অনেক এলাকা : কমছে বনভূমি

নদীতে বিলীন হচ্ছে সুন্দরবনের অনেক এলাকা। কমছে বনভূমি। বনের বিভিন্ন স্থানে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বন বিভাগের জেটি ও স্থাপনা। অফিস ব্যারাক ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বনরক্ষীরা। বনের ৯টি স্থানের ভাঙন ঠেকাতে গত সেপ্টেম্বরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তা চেয়েছিল পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ। বগি ফরেস্ট অফিসের সামনে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেললেও তাতে তেমন কোনো কাজ হয়নি। বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েক বছর ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন চলছে। বেশ বড় এলাকা গাছপালাসহ নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে দুবলা ফরেস্ট অফিসের জেটি, খাবার পানির একাধিক পুকুর, অফিস ভবন, মেহেরআলী চরের সাইক্লোন শেল্টার ও মিষ্টি পানির পুকুর সাগরে বিলীন হয়েছে। সাগরে বিলীন হয়েছে কটকার পুরাতন রেস্ট হাউস ভবন ও জেটি। বগি ফরেস্ট অফিসের দোতলা ভবন নদীতে বিলীন হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। অনেক স্থানে অফিস ও পুকুর নদীতে বিলীন হওয়ার পথে। এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের সময় জানা যায়, বনের ৯টি স্থানে এভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এগুলো হলো, কচিখালী অভয়ারণ্যকেন্দ্র, কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্র, চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়ি, জেলেপল্লি দুবলা টহল ফাঁড়ি, বগি ফরেস্ট স্টেশন, ঝাপসি টহল ফাঁড়ি, জোংড়া টহল ফাঁড়ি, করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র ও শুয়ারমারা টহল ফাঁড়ি। এই প্রেক্ষাপটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তা চাওয়া হয়। সুন্দরবনের প্রধান পর্যটন স্পট কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্টার সোয়েবুর রহমান সুমন বলেন, সাগরের ভাঙনে কটকার বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল সাগরে বিলীন হচ্ছে। ক্রমাগত বনভূমি ভাঙছে। কমছে বনভূমি। অনেক গাছপালা সাগরে বিলীন হয়েছে। কটকার পুরাতন রেস্টহাউস ভবন সাগরে চলে গেছে। তাছাড়া সুন্দরবনের গহিনে অনেক জায়গা নদী খালে বিলীন হয়েছে। কটকার ফরেস্ট অফিস এখন ভাঙনের মুখে বলে ঐ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান। বগি ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা আ. সবুর বলেন, তাদের অফিস-কাম ব্যারাক নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ঝুঁকি এড়াতে তারা ভবন ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। বগি ফরেস্ট অফিসের ভাঙন ঠেকাতে গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীতে বালুর বস্তা ডাম্পিং করেছিল। তাতে নদী ভাঙন কমেনি। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) রানা দেব বলেন, সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানের বনভূমি যেমন নদীতে ভাঙছে, তেমনি আবার অনেক জায়গায় নদীতে চর জেগে উঠেছে। নদীভাঙনের ফলে বন বিভাগের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের পরে ভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মো. আলবুন্নি বলেন, সুন্দরবন বিভাগের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বগি ফরেস্ট স্টেশন অফিসের সামনে ভাঙন ঠেকাতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ নদীতে ফেলা হয়েছে। বাজেট স্বল্পতার কারণে সুন্দরবনের অন্যান্য স্থানে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করা সম্ভব হয়নি। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করীম বলেন, সুন্দরবনের কয়েকটি স্থানে ব্যাপকভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই ভাঙনে ইতিমধ্যে অনেক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এরূপ ভাঙন শুরু হয়েছে বলে তার ধারণা। জরুরি ভিত্তিতে সুন্দরবনের ৯টি স্থানের ভাঙন ঠেকাতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলীকে অনুরোধ জানিয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে একটি পত্র দেওয়া হয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড বগিতে ভাঙনকবলিত স্থানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ নদীতে ফেলেছিল। কিন্তু তাতে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব হয়নি।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles