23.9 C
New York
সোমবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৫

নদী পুনরুদ্ধারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাইলেন পরিবেশ উপদেষ্টা

বাংলাদেশকে নদী পুনরুদ্ধারের সফল উদাহরণ হিসেবে গড়ে তুলতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা চেয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার পানি ভবনে অনুষ্ঠিত নদী পুনরুদ্ধার : বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা শীর্ষক জ্ঞান বিনিময় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

তিনি বলেন, একটি মাত্র নদীর পরিবর্তে নদীর সংযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা জরুরি। দূষিত নদীগুলোও সুপেয় পানির উৎসে পরিণত হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ ক্ষেত্রে কার্যকর সমাধান দেখিয়েছে।

বুড়িগঙ্গার জন্য ট্যানারির ক্রোমিয়াম দূষণ বড় চ্যালেঞ্জ। নীতি ও পরিকল্পনার পরিবর্তে দ্রুত বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট ও ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এডিবির সহায়তায় একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা জরুরি।

তিনি জানান, ১৯৯৯ সালের পানি নীতি ও ডেল্টা পরিকল্পনার চলমান সংশোধন ভবিষ্যতের নদী পুনরুদ্ধারের কাঠামো হিসেবে কাজ করবে। পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো) ইতোমধ্যে উপত্যকার নদীগুলোর পুনরুদ্ধারের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে।

তিনি আরও বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে দূষণকারীদের চিঠি দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং সরকার শিল্পকারখানার জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে সহায়তা দিতে প্রস্তুত। নদী দখলদারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকাও সরকারের কাছে রয়েছে। এছাড়া, নদীর প্লাস্টিক দূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রচলিত ড্রেজার দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য সরানো সম্ভব নয়, এজন্য বিশেষ যন্ত্রপাতির প্রয়োজন। তাই পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কর্মপরিষদ গঠনের আহ্বান জানান।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, বর্ষাকালে নদীর স্বাভাবিক প্লাবন দূষণ কমাতে ভূমিকা রাখে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, যথাযথ সম্পদ ও উদ্যোগ নিয়ে ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে সুরমার মতো নদীগুলোর পুনরুদ্ধার সম্ভব।

তিনি নদী-নির্ভর জনগোষ্ঠীকে পুনরুদ্ধার কর্মপরিকল্পনায় সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা কামনা করেন। তিনি প্রকল্পভিত্তিক নয়, প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানাধীন ধারাবাহিক নদী পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার ওপর জোর দেন। এডিবির সহায়তায় অন্তত একটি নদীকে দখল ও দূষণমুক্ত করার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দেন।

সেমিনারে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের নবনিযুক্ত প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ; বাংলাদেশে এডিবির আবাসিক প্রতিনিধি হো ইউন জিয়ং ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান।

এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, এডিবির পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ ইয়াওঝো ঝোউ, ইয়াসমিন সিদ্দিকী, আও শিওন ইয়ি, জুয়েলিয়াং কাই, স্টেফান রাউ, এরিক কিনসিউ, অরুণ শুমশেরে রানা, কেনিচি ইয়োকোয়ামা প্রমুখ অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সাম্প্রতিক প্রবন্ধসমূহ